Tuesday, July 16, 2013

আদালতের রায়ের বিপক্ষে গিয়ে দেশব্যাপী জামায়াত- শিবিরের বর্বরতম ধ্বংসলীলা শুরু!

১)

জামায়াতি তাণ্ডব, বাসচাপায় প্রাণ গেল শিশুর


গাজীপুরে হরতালে জামায়াত-শিবির কর্মীদের তাণ্ডবের মধ্যে একটি বাসের নিচে চাপা পড়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আগুনে দগ্ধ হয়েছেন এক বাসচালক।

নিহত নাদিয়া  সুলতানা (৯) নেত্রকোনার পূর্বধোলার সাইদুল ইসলামের মেয়ে।
জয়দেবপুর থানার ওসি জাহিদুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় জামায়াত-শিবির কর্মীরা কয়েকটি গাড়িতে ভাংচুর চালায়। এক পর্যায়ে ভালুকাগামী একটি বাসে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয় তারা।
ওই বাসের যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করে  নেমে রাস্তার পাশে দাঁড়ান। এ সময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকটি বাস দ্রুত পেছন দিকে সরার চেষ্টা করলে রাস্তায় দাঁড়ানো নাদিয়া চাপা পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এদিকে আগুনে ওই বাসের চালক জাকির হোসেন দগ্ধ হয়েছেন। তাকে গাজীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আগুনে তার ডান হাত ও বুকের ডান অংশ পুড়ে গেছে বলে হাসপাতালের চিকিৎসক আবদুস সালাম জানিয়েছেন। হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে অন্তত ১০ যাত্রী আহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
নাদিয়ার মৃতদেহ গাজীপুর সদর হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধে সাবেক আমির গোলাম আযমের কারাদণ্ডের প্রতিবাদে সারা-দেশে হরতাল করছে জামায়াতে ইসলামী।




২)

চাঁপাইনবাবগঞ্জে জামায়াতের ককটেলে শিশুসহ আহত ৬



চাঁপাইনবাবগঞ্জে জামায়াতের ককটেলে শিশুসহ আহত ৬
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের পুরাতন বাজারে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। এতে তিনটি শিশুসহ ছয়জন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আহত সজিব (৮), আমান (৯), ইসমিকা (৫), ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম, আসাদুল হকসহ ছয়জনকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনার পর ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম বজলুর রশিদ এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।



৩)
জামায়াতের হরতালে গাড়িতে আগুন

গোলাম আযমের রায় প্রত্যাখ্যান করে তার মুক্তির দাবিতে জামাতের হরতালের শুরুতেই ঢাকার ডেমরা ও নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় যানবাহন পুড়িয়েছে দলটির কর্মীরা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের যাত্রাবাড়ী এলাকার সহকারী কমিশনার মিনহাজুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৭টার দিকে ডেমরার রানিমহল সিনেমা হলের সামনে একটি মাইক্রোবাসে আগুন দেয় হরতালকারীরা। এরপর  তারা দ্রুত ওই এলাকা ত্যাগ করে।
এছাড়া সকালে যাত্রাবাড়ীর বিভিন্ন এলাকার অলিগলিতে জামায়াত কর্মীরা মিছিলের চেষ্টা করে বলে সহকারী কমিশনার জানান।
এদিকে সকাল সোয়া ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় একটি বাসে আগুন দেয়া হয়।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ব্রজেন কুমার সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, খবর পেয়ে তাদের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এছাড়া সকালে রাজধানীর পল্লবী ও রামপুরা এলাকায়ও হরতালের সমর্থনে জামায়াত-শিবির কর্মীদের মিছিলের খবর পাওয়া গেছে।
যুদ্ধাপরাধের পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জামায়াতের মুক্তিযুদ্ধকালীন আমির গোলাম আযমকে মোট ৯০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সোমবার ওই রায় ঘোষণার পর সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা এই হরতালের ঘোষণা দেয় জামায়াত।
গোলাম আযমের রায়ের দিনে হরতালে একটি বাসে আগুন দেয় জামায়াত কর্মীরা
গোলাম আযমের রায়ের দিনে হরতালে একটি বাসে আগুন দেয় জামায়াত কর্মীরা
রায় ঘোষণার দিনও তারা সারা দেশে হরতাল করে। দলটির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক বোমাবাজি, হামলা-ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ করে এবং কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে সহিংসতায় পাঁচজন নিহত হন।
এর আগেও ট্রাইব্যুনালের রায়ের দিন ও পরে হরতাল করে সহিংসতা চালায় একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াত। 
হরতালের কারণে সোমবার সকাল থেকেই রাজধানীর প্রতিটি সড়কে অবস্থান নিয়ে আছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য। বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে।
মঙ্গলবারের হরতালে রাজধানীতে আগের দিনের চেয়ে বেশি যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ থেকে দূর পাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
রেল ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ট্রাইব্যুনালের রায় প্রত্যাখ্যান করে গোলাম আযমের ফাঁসির দাবিতে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চও মঙ্গলবার সারা দেশে হরতাল করছে।


৪)

পিকেটারের হামলায় দুর্ঘটনা, নিহত ১


দিনাজপুরের রানীরবন্দরে জামায়াত-শিবিরের পিকেটারদের হামলায় ট্যাংকলড়ি দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন।

এ সময় ওই ট্যাংকলড়ির চালক গুরুতর আহত হন।
মঙ্গলবার সকালে দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
নিহত আব্দুল কুদ্দুসের (৬০) বাড়ি চিরিরবন্দর উপজেলার ফতেজংপুর গ্রামে। পেশায় তিনি ট্রাক চালক।
চিরিরবন্দর থানার পরিদর্শক হারেসুল ইসলাম জানান, ভোরে জামায়াত-শিবিরের পিকেটাররা একটি ট্যাংকলড়ি লক্ষ্য করে ইট ছুঁড়ে মারলে চালক আহত হন এবং গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন।
এ সময লড়িটি একটি রিকশাভ্যানকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। এতে ওই ভ্যানের আরোহী আব্দুল কুদ্দুস গুরুতর আহত হন।
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
আহত লড়িচালক হাসান আলীকে (৩৬) দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।


৫)

গোবিন্দগঞ্জে বোমা উদ্ধার


গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় পরিত্যক্ত অবস্থায় সাতটি তাজা হাতবোমা উদ্ধার করেছে র‌্যাব।

মঙ্গলবার কালিতলা বাজারের পাশে বোমাগুলো পাওয়া যায় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন জানান, গোপন সংবাদ পেয়ে র‌্যাব-৫ জয়পুরহাটের সদস্যরা বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি চটের ব্যাগে রাখা এই হাতবোমাগুলো উদ্ধার করে।
তিনি জানান, ভোরে ওই এলাকায় জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের নেতাকর্মীরা সমবেত হয়েছিল।
হরতালে নাশকতা করতে বোমাগুলো এখানে আনা হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, বলেন তিনি।



৬)

গাজীপুরে বাসে আগুন


গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে একটি বাসে অগ্নিসংযোগ ও বেশকিছু গাড়ির ভাংচুর করেছে জামায়াতের হরতাল সমর্থকরা।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল ১০টার দিকে ঢাকা থেকে কোনাবাড়ীগামী যাত্রীবাহী স্কাইলাইন পরিবহনের বাসে আগুন দেয়া হয়।
বাসে যাত্রী ওঠানোর সময় ১০-১৫ জন হরতাল সমর্থক বাসটির পিছনের সিটে অগ্নিসংযোগ করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এছাড়া সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া, চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকার মহাসড়কে পিকেটাররা ইট ছুঁড়ে কয়েকটি গাড়ির কাচ ভাংচুর করে। এছাড়া লক্ষ্মীপুরা এলাকায় শিববাড়ি-চান্দনা-চৌরাস্তা সড়কের ওপর কাঠ ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ ও কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে পিকেটাররা।
গাজীপুরে দূরপাল্লার কোনো যান চলাচল না করলেও সড়ক-মহাসড়কগুলোতে অভ্যন্তরীণ রুটের বাস, পিকআপ, অটোরিকশা, লেগুনা, টেম্পু ও রিকশা চলাচল রয়েছে। ট্রেন চলাচলও স্বাভাবিক। অফিস-আদালত, কল-কারখানা, বিপনিবিতান, দোকানপাট খোলা রয়েছে।
জয়দেবপুর থানার ওসি মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, কোনাবাড়ি, ভোগড়া বাইপাস সড়ক, চান্দনা এলাকায় জামায়াত-শিবির ঝটিকা মিছিল বের করে বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করেছে।



৭)

সিলেটে গাড়ি ভাংচুর শিবিরের


হরতালের সকালে সিলেট নগরীতে গাড়ি ভাংচুর করেছে ইসলামী ছাত্র শিবিরকর্মীরা।

মঙ্গলবার সকালে তারা ঝটিকা মিছিল এবং টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধও করে।
এছাড়া ওসমানী মেডিকেল হাসপাতাল এলাকা থেকে পাঠানটুলা পর্যন্ত পিকেটিং করে।
এদিকে, নগরীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকা থেকে হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করেছে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা।
গোলাম আযমের মামলার রায় হওয়ার পর জামায়াতে ইসলামী ও গণজাগরণ মঞ্চ পৃথকভাবে মঙ্গলবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হাতাল ডাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে মেডিকেল কলেজ এলাকায় শিবিরের ঝটিকা মিছিলের সময় একটি পিকআপ ভ্যান ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ আটটি গাড়ি ভাংচুর করে তারা।
একই এলাকায় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ। কিছুক্ষণ পর তারা চলে যায়।
এদিকে, সকাল সাড়ে ১০টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে হরতালের সমর্থনে মিছিল করে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা।
মিছিলটি নগরীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কোর্ট পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়।
সকাল থেকে নগরীতে কিছু সিএনজি অটোরিকশা ও রিকশা চলাচল করলেও ভারি যানবাহন চলছে না।সিলেট থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি।
তবে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ জানান, স্টেশন থেকে ট্রেন যথাসময়ে ছেড়ে গেছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এসএম রোকন উদ্দিন জানান, হরতালে যেকোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি র‌্যাব ও বিজিবির টহল রয়েছে।




৮)

সিরাজগঞ্জে যানবাহন ভাংচুর, আটক ৮


সিরাজগঞ্জে হরতালের সকালে যানবাহনে ভাংচুর চালিয়েছে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা।

এছাড়া পুলিশের সঙ্গে পিকেটারদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াও হয়েছে। পুলিশ আটজনকে আটক করেছে।
জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর গোলাম আযমের ৯০ বছর কারাদণ্ড হওয়ার পর মঙ্গলবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে দলটি।
এ রায় প্রত্যাখ্যান করে গণজাগরণ মঞ্চও সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উল্লাপাড়ার পূর্বদেলুয়া এলাকায় পাবনা-নগরবাড়ি মহাসড়কে দুইটি ট্রাক, একটি ওষুধবাহী পিকআপসহ কয়েকটি যানবাহনে ভাংচুর চালানো হয়েছে।
উল্লাপাড়া থানার ওসি হাবিবুল ইসলাম জানান, গজারিয়া ব্রিজের কাছে এবং খোকশাবাড়ী এলাকায় পিকেটিং করার সময় জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।
এ সময় খোকশাবড়ি ইউনিয়ন পরিষদের শিবিরের সভাপতি মিজানসহ অন্তত আটজনকে আটক করা হয়েছে।
কয়েকরাউন্ড টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
বেলা ১১টার দিকে ওসি বলেন, মহাসড়কে টহল জোরদার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আটকদের থানায় রেখে যাচাইবাছাই করা হচ্ছে। 
শহর থেকে দূরপাল্লার ও অভ্যন্তরীণ রুটে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক আছে।
সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম খান জানান, শহরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।


৯)

সাতক্ষীরায় জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষ, নিহত ২


হরতাল চলাকালে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন জামায়াত নেতারা।

মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৮টার  দিকে পুশুলিয়া ইউনিয়নের পাউখালী বাজারে এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশের সাত সদস্যসহ আরো অন্তত ১১ জন।
কালীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) তাজুল ইসলাম জানান, জামায়াত কর্মীরা সকালে পাউখালী বাজারে গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে। খবর পেয়ে পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে জামায়াত-শিবিরের কয়েকশ কর্মী পুলিশের ওপর হামলা চালায় ও ককটেল নিক্ষেপ করে।
এ সময় আত্মরক্ষার জন্য পুলিশ গুলি ছোড়ে বলে কালীগঞ্জের পরিদর্শক (তদন্ত) আক্তারুজ্জামান জানান।
ঘণ্টাব্যাপী থেমে থেমে সংঘর্ষে এসআই সোহরাব হোসেন ও নকিব এবং কনস্টেবল ফরিদসহ সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে পরিদর্শক জানান। তাদের কালিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল ওয়াহাব সিদ্দিকী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে তাদের দুই কর্মী নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরো ছয়জন।
নিহত রুহুল আমীন (৪০) স্থানীয় জামায়াত কর্মী এবং আরিফুজ্জামান (১৯) একজন শিবিরকর্মী বলে ওয়াহাব জানান। তিনি বলছেন, তাদের লাশ পাউখালীতে রাখা হয়েছে।
  তবে পুলিশ বলছে, দুই শিবিরকর্মী গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেলেও তাদের মৃত্যু হয়েছে কি না সে বিষয়ে তারা নিশ্চিত নন।  
পাউখালি এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এএসপি তাজুল ইসলাম জানান, কনস্টেবল ফরিদের অবস্থা আশঙ্কাজন। তাকে কালীগঞ্জ থেকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।



১০)

চট্টগ্রামে জামায়াতের বোমায় সাংবাদিক আহত


বোমাবাজি ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীতে জামায়াত-শিবিরের হরতাল চলছে।

জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সহযোগী সংগঠন শিবিরের নেতাকর্মীরা মঙ্গলবার ভোর থেকেই নগরীতে বিচ্ছিন্নভাবে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানোর পাশাপাশি যানবাহন ভাংচুর করে।
সকালে নগরীর বাদুরতলায় শিবিরের ছোড়া হাতবোমার আঘাতে টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশনের ক্যামেরাম্যান ইসমাইল হোসেন পলাশ আহত হয়েছেন।
এর আগে সকাল ৭টার দিকে শিবিরকর্মীরা নগরীর পতেঙ্গা থানার চরপাড়া এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি মিনিবাসে আগুন দেয় বলে ওসি শাহাবুদ্দিন জানিয়েছেন।
এছাড়া নগরীর নসিমন ভবন এলাকায় সকালে বেশ কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায় জামায়াত-শিবিরকর্মীরা।
সকাল ৮টার দিকে বাদুরতলা এলাকায় পুলিশকে লক্ষ্য করে দুই-তিনটি হাতবোমা নিক্ষেপ করে শিবিরকর্মীরা। তখন হাতবোমার স্প্রিন্টারে আহত হন ক্যামেরাম্যান পলাশ।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের পাঁচলাইশ জোনের সহকারী কমিশনার আবদুর রউফ জানান, পরে শিবিরকর্মীরা পুলিশের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যায়।
এছাড়া খুলশী থানার ওয়্যারল্যাস নামক এলাকায় সকালে হরতালকারীরা বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাংচুর করে বলে নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার আবদুল গফুর জানান।
হরতালের মধ্যে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অন্যান্য দিনের তুলনায় কম সংখ্যায় গাড়ি চলতে দেখা গেছে। অবশ্য বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মূল সড়কগুলোতে গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়।
যুদ্ধাপরাধে গোলাম আযমের কারাদণ্ডের প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামীর ডাকা এ হরতালে সরকারি-বেসরকারি অফিস- আদালত এবং তৈরি পোশাক কারখানায় স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে।
চট্টগ্রাম বন্দরেও কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানা গেছে।



১১)

রাজশাহীতে শিবির-পুলিশ সংঘর্ষ



রাজশাহীতে মঙ্গলবার সকালে শিবিরের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।

গোলাম আযমের ফাঁসির দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের নেতাকর্মীরাও মিছিল করেছেন।
পুলিশ ছয় শিবিরকর্মীকে আটক করেছে।
বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, শিবিরকর্মীরা নাশকতার চেষ্টা করে এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে হাতবোমা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
তাদের ছাত্রভঙ্গ করতে অর্ধশত রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল ছোড়ে পুলিশ। পরে ছয় শিবিরকর্মীকে আটক করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকালে হরতালের সমর্থনে রাজশাহী মহানগরীর শাহ মখদুম কলেজের সামনে ঝটিকা মিছিল বের করে শিবিরের নেতাকর্মীরা।
এ সময় তারা রাস্তার ওপর টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করে। এ সশয় পুলিশ গেলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে তারা।
পরে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল ছুঁড়লে শিবিরকর্মীরা পালিয়ে যায়।
এদিকে, জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
মিছিলে অন্যান্যের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মলয় ভৌমিকও ছিলেন।
গোলাম আযমের মামলার রায় হওয়ার পর জামায়াতে ইসলামী ও গণজাগরণ মঞ্চ পৃথকভাবে সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হারতাল ডাকে।


১২)

ফেনীতে ভাংচুর, শিবির নেতা আটক


ফেনীতে হরতালের শুরুতে যানবাহন ভাংচুর করেছে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। নাশকতার আশংকায় রোববার রাতে আটক করা হয়েছে স্থানীয় শিবিরের ৫ নেতাকর্মীকে।   

ফেনী হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ওসি আবদুল কাদের জানান, সোমবার ভোর ৫টার দিকে ফেনী-কুমিল্লা সীমান্তের মোহাম্মদ আলিবাজার এলাকায় ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে একটি ট্রাকে আগুন দেয়ার পাশাপাশি কয়েকটি এলাকায় প্রায় ২০টি গাড়ি ভাংচুর করে পিকেটাররা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পরে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে ট্রাকের আগুন নিভিয়ে ফেলে।
মুক্তিযুদ্ধকালীন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের রায়ের দিন সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যার এই হরতাল পালন করছে দলটি।
ওসি কাদের বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে আরো জানান, হরতালের আগে রোববার রাতে নাশকতার আশংকায় শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়েছে শিবিরের পাঁচ নেতা-কর্মীকে।
এদের মধ্যে ফেনী কলেজ ছাত্র শিবিরের সভাপতি আতিকুর রহমান ও শহর ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ মোশারফ রয়েছেন।
ওসি বলেন, ট্রাকে আগুন দেয়া ছাড়াও ফাজিলপুর, কাজির দিঘি ও লেমুয়ায় বেশ কিছু গাড়িও ভাংচুর করেছে হরতাল সমর্থকরা।



১৩)

রংপুরে হরতালে সড়ক অবরোধ-ককটেল বিস্ফোরণ


রংপুর: রংপুরে হরতালে মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করেছে শিবির কর্মীরা।এ সময় তারা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ৬টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। 

হরতালের শুরুতে সকালে নগরীর লালবাগে সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে শিবির নেতাকর্মীরা।এছাড়া রোকেয়া বিশ্ববিদালয়ের ভিসির বাংলোর সামনে টায়ারে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ করে তারা।

অন্যদিকে, নগরীর রাজা রামমোহন ক্লাবের সামনে ৬টি ককটেল বিস্ফোরণ করে পিকেটাররা। 
রংপুর মহানগরী থেকে কোনো ভারী ও মাঝারি পরিবহন চলাচল করেনি।দোকানপাট বন্ধ থাকলেও নগরীতে রিকশা-অটোরিকশা চলাচল করেছে।হরতালে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

রংপুর গণজাগরণ মঞ্চের নেতাকর্মীরা সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় মিছিল বের করে।এরপর তারা সিটি বাজারের সামনে সমাবেশ করে। 

রংপুর সহকারী পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বাংলানিউজকে জানান, হরতালে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।



১৪)

হরতালে লক্ষ্মীপুরে অবরোধ-ককটেল বিস্ফোরণ


লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে হরতাল চলাকালে সড়কের দুই পাশের গাছ কেটে অবরোধ করেছে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা।এ সময় কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় তারা। 

মঙ্গলবার সকালে নোয়াখালী-লক্ষ্মীপুর সড়কের অন্তত ১৫টি স্থানে গাছ কেটে সড়কের ওপর ফেলে রাখে। এ সময় তারা হরতালের সমর্থনে সরকার বিরোধী স্লোগান দিয়ে খণ্ড খণ্ড লাঠি মিছিল করে।মিছিল থেকে লক্ষ্মীপুর জেলা সদর, রায়পুর ও কমলনগর উপজেলার বিভিন্নস্থানে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত অন্তত ১৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

এদিকে, হরতালে লক্ষ্মীপুর ও রায়পুর টার্মিনাল থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও চাঁদপুরসহ দূরপাল্লার কোনো যানবাহন ছেড়ে যায়নি।জেলার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে রিকশা চলাচল ছিল স্বাভাবিক। ব্যাংক-বীমা, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও অফিস-আদালতে লোকজনের উপস্থিতি ছিল অন্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের ৯০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার প্রতিবাদে দেশব্যাপী হরতাল আহ্বান করে জামায়াত শিবির।এ জন্য ভোর থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে লক্ষ্মীপুর সদরের বাস টার্মিনাল, বটতলি, রায়পুর উপজেলার বাস টার্মিনাল, বর্ডার, লেংড়া বাজার, রামগঞ্জ উপজেলার পানপাড়া ও কমলনগর উপজেলার হাজীরহাট এলাকায় অবস্থায় নেয়। 

এ সময় তারা দুইটি মোটরসাইকেল ও ৩টি অটোরিকশা ভাঙচুর, টায়ারে অগ্নিসংযোগ ও সড়কের দুই পাশের গাছ করাত দিয়ে কেটে সড়কে ফেলে রাখে। 

এ ব্যাপারে রায়পুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামছুল হক বাংলানিউজকে জানান, রায়পুরে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাটি কেউ পুলিশকে জানায়নি। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান করছে।গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। 



১৫)

যশোরে শিবিরের ককটেল বিস্ফোরণে আহত ৩


যশোরে শিবিরের ককটেল বিস্ফোরণে আহত ৩
যশোর: যশোরে হরতাল চলাকালে ককটেল বিস্ফোরণ ও বাস ভাঙচুর করেছে শিবির কর্মীরা। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণে তিনজন আহত হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে জেলা পরিষদ ভবনের সামনে এ ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এর আগে যশোর-মাগুরা মহাসড়কের হাশিমপুর এলাকায় একটি বাস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর একটার দিকে কয়েকজন শিবির কর্মী ইজিবাইকে চড়ে যাওয়ার সময় জেলা পরিষদ ভবনের সামনে সড়কের পাশে একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়।

এতে এক রিকশাচালক ও দুই পথচারী সামান্য আহত হন। এরা হলেন, রিকসা চালক শহরের শংকরপুর এলাকার লুৎফর রহমান (৫২), পথচারী একই এলাকার সাগর (১৩) ও অপর অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবক। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, সকাল ১০টার দিকে যশোর-মাগুরা মহাসড়কের হাশিমপুর বাজারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে হামলা চালিয়ে বাসটির সামনের ও জানালার গ্লাস ভাঙচুর করে শিবির কর্মীর‍া।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক শেখ বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য জেলা পরিষদের সামনে বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটানো হতে পারে।

No comments:

Post a Comment