নিজেদের রাজনৈতিক লালসাকে জিইয়ে রাখতে এবং হঠাৎ করে নেতা হওয়ার ইচ্ছায়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) পরিবারকে কয়েকটি রাজনৈতিক দল সিলেটি- নন সিলেটি, এই দুইভাগে ভাগ করে ফেলতে চাইছে এবং ইতোমধ্যে ভাগ করে ফেলেছেও। আবার অন্যদিকে, ঠিক যারা বিসিএস এর কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনে মাঠে নেমেছিল, তাদেরকেই দেখা যাচ্ছে শাবিপ্রবি- তে সিলেটিদের শতকরা ৫০ ভাগ কোটা বরাদ্ধ দেয়ার পক্ষে মাঠে নামতে।
অথচ যারা এ দাবি তুলছে, প্রথমত, তারা সম্ভবত বিশ্ববিদ্যালয়ের সংজ্ঞাই জানেন না। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সব মতের, সব ধরনের মানুষের যদি নিজেদের মাঝে কথা বলা, আইডিয়া ভাগ করে নেয়ার সুযোগ না থেকে থাকে, তাহলে সেটা কখনো প্রকৃত অর্থে বিশ্ববিদ্যালয়ই হতে পারে না।
দ্বিতীয়ত, ধরে নিলাম, যারা গুচ্ছ পদ্ধতির বিরুদ্ধে, তাদের দাবি রাখা হলো। এর সুদূরপ্রসারী ফল কি আদৌ ভাল কিছু হবে? উত্তর হলো, মোটেও না। কারণ, যেখানে কোন প্রতিযোগিতা নেই, অথবা প্রতিযোগিতা কমিয়ে দেয়া হয়, সেখানে যারা ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিবে তারাও কি এস এস সি, এইচ এস সি এমন কি ভর্তি পরীক্ষায় টিকে থাকতে এখনকার মতো অনেক অনে বেশি বেশি পড়বে, না কি গা ছেড়ে দিবে? আর যদি, গা ছেড়ে দেয়, তাহলে সিলেটে এখন যেমন শিক্ষার একটা খুবই স্বাস্থ্যকর অবস্থা বিরাজ করছে, তা কি আর ভবিষ্যতে টিকে থাকবে? মোটেই টিকে থাকবে না। এটা স্পষ্টতই, পরোক্ষভাবে সিলেটিদেরকে পড়ালেখা চর্চা তথা মেধা বিকাশে বাঁধা দিবে।
এবং আমার ধারণা কোন সিলেটিই চাইবে না, শিক্ষাক্ষেত্রে এই উন্নতি থেকে নিজেদেরকে সরিয়ে নিতে। মনে রাখতে হবে, ব্রিটিশ- পাকিস্তান আমলে সিলেটিদের আলাদা একটা অবস্থান ছিল শিক্ষা- দীক্ষায়, মাঝে তাতে ভাটা পড়ে গিয়েছিল, এখন তা আবার শুরু হয়েছে, এটাকে কোনভাবেই নষ্ট হতে দেয়া যাবে না।
তৃতীয়ত, আজ শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলা হলো এবং দাপ্তরিক একটা বৈঠকে তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালি- গালাজ করা হলো। তো তার দোষ কি ছিল? তার দোষ কি এটাই দোষ ছিল যে, তিনি একীভূত একটা ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি চেয়ে আসছিলেন?
তিনি তো আর এ বলেন নি, যে সারা জীবন শাবিপ্রবি সুযোগ দিয়ে যাবে, আর অন্যরা দিবে না। এটা একটা প্রক্রিয়া। কোন ভাল কাজ একদিনে হয় না, ধীরে ধীরে সময় নিয়ে হয়। আর এসবক্ষেত্রে উদ্যোগটা বড় প্রতিষ্ঠান থেকেই আসতে হয়, এবং অবশ্যই শাবিপ্রবি আর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) এর মাঝে শাবিপ্রবিই বড় ভাই, স্বভাবতই তার ত্যাগের পরিমানটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেশি হবে।
অন্যদিকে, এ নিয়ে আজ উপাচার্জের বাসভবনের সামনে এবং ভিতরে ককটেল নিক্ষেপ করে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এর মানে কি দাঁড়ালো?
যাবতীয় রাজনৈতিক সংঘাত স্বত্তেও, শাবিপ্রবি প্রায় ভালই চলছিল, অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো মাসের মাস বন্ধ না থেকে। এখন ইচ্ছে করেই কোন এক মহল এমন কিছু করতে চাচ্ছে, যাতে করে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি মুখ থুবড়ে পড়ে।
চতুর্থত, আন্দোলনের বিষয় যদি এমন হতো, 'গুচ্ছ পরীক্ষা পদ্ধতি সব বিশ্ববিদ্যালয়কে চালু করতেই হবে।' তাহলে আমি মনে প্রাণে এই আন্দোলনের সাথে একাত্নতা প্রকাশ করতাম। শুধুমাত্র তখনই এই আন্দলনটা একটি Constructive ভিত্তি পেতো। তবে এটা না করে, এই পদ্ধতি ভাঙতে চাওয়ার মানে হচ্ছে Destructive একটা পথে হাটা শুরু করা। আর Destructive কোনকিছু আজ পর্যন্ত পৃথিবীর কোন জায়গায় কোন ভাল কিছু করতে পারেনি, শুধুমাত্র মানব সভ্যতাকে পিছিয়ে দেয়া ছাড়া।
সিলেটি- নন সিলেটি এর মাঝে অহেতুক এই লাগালাগি থেকে গা বাঁচিয়ে চলতে অনুরোধ করবো সবাইকেই। এখন দেখা যাচ্ছে, নন সিলেটিরা হেয় করে কথা বলছে সিলেটিদের, পালটা আক্রমণ আসা শুরু করেছে সিলেটিদের মাঝ থেকেও। পৃথবীর উন্নত দেশগুলো যে সিস্টেম ফলো করছে, তার অনেকগুলো এদেশের অনেক সেক্টরের ব্যাবস্থাপনাকে আসলেই অনেক সহজ- সরল করে দিতে পারে। আর এ কথা ভুলে গেলে চলবে না জাগতিক চিন্তাধারায়, 'সবার উপরে মানুষ সত্য, তার উপরে কিছু নাই'।
তাই, যারাই বিভেদ ধরিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে তাদের থেকে দূরে থাকুন। আরো ভাল করে খেয়াল করলে দেখবেন, সিলেটিদের উপর অথবা সিলেটি ভাষা, কৃষ্টির উপর যখন সত্যিকার কোন আঘাত আসে তখন কিন্তু এইসব 'হঠাৎ নেতাদের' দেখা মিলে না। এরা সুযোগসন্ধানী ছাড়া কিছুই নয়, কেউ ভোটের কাঙ্গাল আর কেউ 'নেতা' হওয়ার কাঙ্গাল। নিজেদের বাঁচিয়ে চলুন এদের দাবা খেলার গুটি হওয়া থেকে।
লেখাটির শেষ দিকে এসে বলতে চাই যে, পৃথিবীর কিছু জিনিস আছে সার্বজনীন। যেমন, মেধা, শিল্প, সৃষ্টি এরকম অনেক কিছুই। এগুলোকে কোন বাঁধা দিয়ে আটকে রাখা যায় না। আর তাই বাংলাদেশের একজন সাধারণ গ্রামের কৃষকের সন্তান একসময় যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যায় স্কলারশিপসহ। আর তাই, ইউরোপে বিভিন্ন দেশের সাংসদ সদস্য হয় এদেশের কোন মানুষের রক্তের বাহক।
মেধার কোন সীমা- পরিসীমা নেই, বরং মেধাকে আটকে দেয়া মানে নিজেকে অথবা নিজের সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করা। আমি যদি GRE, IELTS দিয়ে বাইরের কোন দেশে ফান্ডিংসহ পড়তে যাওয়ার স্বপ্ন দেখি, তাহলে সেই একই আমি যবিপ্রবি আর শাবিপ্রবি এর সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিরুদ্ধে যেতে পারি না। যদি এর বিরুদ্ধে গিয়ে থাকি, তাহলে হয় আমি মানসিক বিকারগ্রস্ত, আর নাহয় আমি ইচ্ছা করে অবৈধভাবে সুযোগ নেয়ার জন্য দ্বৈত আদর্শ অনুসরণ করছি।
মনে রাখা প্রয়োজন, মেধাকে আটকে দেয়ার মেকানিজম্ তৈরি করা মানেই একটা পাপ সংগঠিত করা। আর আমার দৃঢ় বিশ্বাস, প্রতিবার যেমন সারা বাংলাদেশের অসংখ্য মেধাবী ছাত্র- ছাত্রীদের পিছনে ফেলে যেভাবে সিলেটিরা শাবিপ্রবি- তে নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছে, ঠিক একইভাবে এবারও সেই সাফল্যের ধারা তারা বজায় রাখবে। বরং আমার ধারণা, তাদের সুযোগ পাওয়ার হার আরো বেশি বেড়ে যাবে। কারণ, সত্যিকারের বীর কখনো তার প্রতিপক্ষকে ভয় পেয়ে ময়দান ছেড়ে দেয় না, বা হঠাৎ করে বলে না যে 'খেলুম্ না', বরং সে লড়ে যায় অদম্য শক্তি দিয়ে, এবং নিশ্চিত করে ছাড়ে- তার বিজয়।
এটাও ভুলে গেলেও চলবে না, কোটা পদ্ধতি তাদের জন্যই প্রণয়ন করা হয় যারা পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠী। এবং আমরা অর্থ্যাৎ সিলেটিরা নিজেদেরকে অর্থ থেকে মেধা, কোন দিক থেকেই নিজেদেরকে পশ্চাৎপদ মনে করে না, অন্যদিকে মূলত এই সিলেটিরাই বাংলাদেশের ইমেজ বিশ্বের মাটিতে উঁচু করে ধরে রেখেছে, যার প্রকৃষ্ট ঊদাহরণ হলো নামকরা উদ্যোক্তা সাবিরুল, সাংসদ রোশন আরা সহ অনেকে। বরং সিলেটিদের জন্য শাবিপ্রবি- তে কোটা প্রণয়ন করা নিজেদের জন্যই একধরনের অপমান।
পরিশেষে বলতে চাই, বিজয় তাদেরই হবে যারা তার অধিকার রাখে! স্রষ্টাকে মনে রেখে ঝাঁপিয়ে পড়ো, আর কোনকিছুরই দরকার নেই! মেধাবীদের জয় হোক।
লেখকঃ ইনামুল হাফিজ লতিফী, শিক্ষানবিশ, অর্থনীতি বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।
লেখাটি ইতোমধ্যে নীচে দেয়া লিংকগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে, আরও কয়েকটিতে প্রকাশ হবার প্রক্রিয়াধীন,
১) http://sylheteralap.com/news/category/opinion/detail/69645
২) http://www.gbnews24.com/article.php?details=2290
৩) http://bdn24x7.com/?p=155713
৪) http://surmatimes.com/2013/11/26/39716.aspx/
অথচ যারা এ দাবি তুলছে, প্রথমত, তারা সম্ভবত বিশ্ববিদ্যালয়ের সংজ্ঞাই জানেন না। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সব মতের, সব ধরনের মানুষের যদি নিজেদের মাঝে কথা বলা, আইডিয়া ভাগ করে নেয়ার সুযোগ না থেকে থাকে, তাহলে সেটা কখনো প্রকৃত অর্থে বিশ্ববিদ্যালয়ই হতে পারে না।
দ্বিতীয়ত, ধরে নিলাম, যারা গুচ্ছ পদ্ধতির বিরুদ্ধে, তাদের দাবি রাখা হলো। এর সুদূরপ্রসারী ফল কি আদৌ ভাল কিছু হবে? উত্তর হলো, মোটেও না। কারণ, যেখানে কোন প্রতিযোগিতা নেই, অথবা প্রতিযোগিতা কমিয়ে দেয়া হয়, সেখানে যারা ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিবে তারাও কি এস এস সি, এইচ এস সি এমন কি ভর্তি পরীক্ষায় টিকে থাকতে এখনকার মতো অনেক অনে বেশি বেশি পড়বে, না কি গা ছেড়ে দিবে? আর যদি, গা ছেড়ে দেয়, তাহলে সিলেটে এখন যেমন শিক্ষার একটা খুবই স্বাস্থ্যকর অবস্থা বিরাজ করছে, তা কি আর ভবিষ্যতে টিকে থাকবে? মোটেই টিকে থাকবে না। এটা স্পষ্টতই, পরোক্ষভাবে সিলেটিদেরকে পড়ালেখা চর্চা তথা মেধা বিকাশে বাঁধা দিবে।
এবং আমার ধারণা কোন সিলেটিই চাইবে না, শিক্ষাক্ষেত্রে এই উন্নতি থেকে নিজেদেরকে সরিয়ে নিতে। মনে রাখতে হবে, ব্রিটিশ- পাকিস্তান আমলে সিলেটিদের আলাদা একটা অবস্থান ছিল শিক্ষা- দীক্ষায়, মাঝে তাতে ভাটা পড়ে গিয়েছিল, এখন তা আবার শুরু হয়েছে, এটাকে কোনভাবেই নষ্ট হতে দেয়া যাবে না।
তৃতীয়ত, আজ শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলা হলো এবং দাপ্তরিক একটা বৈঠকে তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালি- গালাজ করা হলো। তো তার দোষ কি ছিল? তার দোষ কি এটাই দোষ ছিল যে, তিনি একীভূত একটা ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি চেয়ে আসছিলেন?
তিনি তো আর এ বলেন নি, যে সারা জীবন শাবিপ্রবি সুযোগ দিয়ে যাবে, আর অন্যরা দিবে না। এটা একটা প্রক্রিয়া। কোন ভাল কাজ একদিনে হয় না, ধীরে ধীরে সময় নিয়ে হয়। আর এসবক্ষেত্রে উদ্যোগটা বড় প্রতিষ্ঠান থেকেই আসতে হয়, এবং অবশ্যই শাবিপ্রবি আর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) এর মাঝে শাবিপ্রবিই বড় ভাই, স্বভাবতই তার ত্যাগের পরিমানটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেশি হবে।
অন্যদিকে, এ নিয়ে আজ উপাচার্জের বাসভবনের সামনে এবং ভিতরে ককটেল নিক্ষেপ করে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এর মানে কি দাঁড়ালো?
যাবতীয় রাজনৈতিক সংঘাত স্বত্তেও, শাবিপ্রবি প্রায় ভালই চলছিল, অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো মাসের মাস বন্ধ না থেকে। এখন ইচ্ছে করেই কোন এক মহল এমন কিছু করতে চাচ্ছে, যাতে করে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি মুখ থুবড়ে পড়ে।
চতুর্থত, আন্দোলনের বিষয় যদি এমন হতো, 'গুচ্ছ পরীক্ষা পদ্ধতি সব বিশ্ববিদ্যালয়কে চালু করতেই হবে।' তাহলে আমি মনে প্রাণে এই আন্দোলনের সাথে একাত্নতা প্রকাশ করতাম। শুধুমাত্র তখনই এই আন্দলনটা একটি Constructive ভিত্তি পেতো। তবে এটা না করে, এই পদ্ধতি ভাঙতে চাওয়ার মানে হচ্ছে Destructive একটা পথে হাটা শুরু করা। আর Destructive কোনকিছু আজ পর্যন্ত পৃথিবীর কোন জায়গায় কোন ভাল কিছু করতে পারেনি, শুধুমাত্র মানব সভ্যতাকে পিছিয়ে দেয়া ছাড়া।
সিলেটি- নন সিলেটি এর মাঝে অহেতুক এই লাগালাগি থেকে গা বাঁচিয়ে চলতে অনুরোধ করবো সবাইকেই। এখন দেখা যাচ্ছে, নন সিলেটিরা হেয় করে কথা বলছে সিলেটিদের, পালটা আক্রমণ আসা শুরু করেছে সিলেটিদের মাঝ থেকেও। পৃথবীর উন্নত দেশগুলো যে সিস্টেম ফলো করছে, তার অনেকগুলো এদেশের অনেক সেক্টরের ব্যাবস্থাপনাকে আসলেই অনেক সহজ- সরল করে দিতে পারে। আর এ কথা ভুলে গেলে চলবে না জাগতিক চিন্তাধারায়, 'সবার উপরে মানুষ সত্য, তার উপরে কিছু নাই'।
তাই, যারাই বিভেদ ধরিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে তাদের থেকে দূরে থাকুন। আরো ভাল করে খেয়াল করলে দেখবেন, সিলেটিদের উপর অথবা সিলেটি ভাষা, কৃষ্টির উপর যখন সত্যিকার কোন আঘাত আসে তখন কিন্তু এইসব 'হঠাৎ নেতাদের' দেখা মিলে না। এরা সুযোগসন্ধানী ছাড়া কিছুই নয়, কেউ ভোটের কাঙ্গাল আর কেউ 'নেতা' হওয়ার কাঙ্গাল। নিজেদের বাঁচিয়ে চলুন এদের দাবা খেলার গুটি হওয়া থেকে।
লেখাটির শেষ দিকে এসে বলতে চাই যে, পৃথিবীর কিছু জিনিস আছে সার্বজনীন। যেমন, মেধা, শিল্প, সৃষ্টি এরকম অনেক কিছুই। এগুলোকে কোন বাঁধা দিয়ে আটকে রাখা যায় না। আর তাই বাংলাদেশের একজন সাধারণ গ্রামের কৃষকের সন্তান একসময় যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যায় স্কলারশিপসহ। আর তাই, ইউরোপে বিভিন্ন দেশের সাংসদ সদস্য হয় এদেশের কোন মানুষের রক্তের বাহক।
মেধার কোন সীমা- পরিসীমা নেই, বরং মেধাকে আটকে দেয়া মানে নিজেকে অথবা নিজের সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করা। আমি যদি GRE, IELTS দিয়ে বাইরের কোন দেশে ফান্ডিংসহ পড়তে যাওয়ার স্বপ্ন দেখি, তাহলে সেই একই আমি যবিপ্রবি আর শাবিপ্রবি এর সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিরুদ্ধে যেতে পারি না। যদি এর বিরুদ্ধে গিয়ে থাকি, তাহলে হয় আমি মানসিক বিকারগ্রস্ত, আর নাহয় আমি ইচ্ছা করে অবৈধভাবে সুযোগ নেয়ার জন্য দ্বৈত আদর্শ অনুসরণ করছি।
মনে রাখা প্রয়োজন, মেধাকে আটকে দেয়ার মেকানিজম্ তৈরি করা মানেই একটা পাপ সংগঠিত করা। আর আমার দৃঢ় বিশ্বাস, প্রতিবার যেমন সারা বাংলাদেশের অসংখ্য মেধাবী ছাত্র- ছাত্রীদের পিছনে ফেলে যেভাবে সিলেটিরা শাবিপ্রবি- তে নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছে, ঠিক একইভাবে এবারও সেই সাফল্যের ধারা তারা বজায় রাখবে। বরং আমার ধারণা, তাদের সুযোগ পাওয়ার হার আরো বেশি বেড়ে যাবে। কারণ, সত্যিকারের বীর কখনো তার প্রতিপক্ষকে ভয় পেয়ে ময়দান ছেড়ে দেয় না, বা হঠাৎ করে বলে না যে 'খেলুম্ না', বরং সে লড়ে যায় অদম্য শক্তি দিয়ে, এবং নিশ্চিত করে ছাড়ে- তার বিজয়।
এটাও ভুলে গেলেও চলবে না, কোটা পদ্ধতি তাদের জন্যই প্রণয়ন করা হয় যারা পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠী। এবং আমরা অর্থ্যাৎ সিলেটিরা নিজেদেরকে অর্থ থেকে মেধা, কোন দিক থেকেই নিজেদেরকে পশ্চাৎপদ মনে করে না, অন্যদিকে মূলত এই সিলেটিরাই বাংলাদেশের ইমেজ বিশ্বের মাটিতে উঁচু করে ধরে রেখেছে, যার প্রকৃষ্ট ঊদাহরণ হলো নামকরা উদ্যোক্তা সাবিরুল, সাংসদ রোশন আরা সহ অনেকে। বরং সিলেটিদের জন্য শাবিপ্রবি- তে কোটা প্রণয়ন করা নিজেদের জন্যই একধরনের অপমান।
পরিশেষে বলতে চাই, বিজয় তাদেরই হবে যারা তার অধিকার রাখে! স্রষ্টাকে মনে রেখে ঝাঁপিয়ে পড়ো, আর কোনকিছুরই দরকার নেই! মেধাবীদের জয় হোক।
লেখকঃ ইনামুল হাফিজ লতিফী, শিক্ষানবিশ, অর্থনীতি বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।
লেখাটি ইতোমধ্যে নীচে দেয়া লিংকগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে, আরও কয়েকটিতে প্রকাশ হবার প্রক্রিয়াধীন,
১) http://sylheteralap.com/news/category/opinion/detail/69645
২) http://www.gbnews24.com/article.php?details=2290
৩) http://bdn24x7.com/?p=155713
৪) http://surmatimes.com/2013/11/26/39716.aspx/
No comments:
Post a Comment